ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ১২ এপ্রিল, ২০২৩ ১৬:৪১

মাঠ ভরা বোরো ধানের রাঙা হাসি

পলাশ (নরসিংদী) সংবাদদাতা
মাঠ ভরা বোরো ধানের রাঙা হাসি

 

কাঁচা ধানের ডগায় সন্তপর্ণে পা ফেলে নামছে বিকেলের রোদ। সাদা বকের নরম পালকের শব্দ আর সরু আলোপথের ঘাস ফুলের সৌরভ চারিদিকে বয়ে আনে নেশার ঘ্রাণ। দূরের নীলিমা ভেদ করে উঁকি দিচ্ছে রঙিন সোনালি চিকন হাসি। এ সময় হালকা মাতাল মৃদুলয়ে দোল খাচ্ছে মাঠ ভরা বোরো ধানের রাঙা হাসি। সবুজ ধানের নরম স্পর্শে তরতর করে কাঁপছে ফসলের ক্ষেত। মাঠজুড়ে রূপালী ধান যেন দিগন্ত ছুঁয়ে নতুনের জাগরণে মেতে উঠেছে। আর বাম্পার ফলনে কৃষকদের প্রাণে বয়ে বেড়াচ্ছে চাঞ্চল্য, আগামী সুখের হাতছানি।
নরসিংদীর পলাশ উপজেলার মাইজবন্ধের কৃষক ফজলুল হক জানান, আমাদের মাঠে কৃষকরা জিরাশাইল পারিজা ব্রি-ধান ২৮, ২৯, ৫০, ৬৪, হাইব্রিড-৫, এসিআই-৬, বলিয়া-২সহ প্রভৃতি জাতের ইরি-বোরা ধানচাষ করেছেন। এবার প্রাকৃতিক দুর্যোগ তেমন একটা ছিলো না। যথাযথ পরিচর্যাসহ সময় মতো সার ব্যবহারে বাম্পার ফসল উৎপাদিত হয়েছে। একি উপজেলার রাবান গ্রামের কৃষক সুকুমার দাস বলেন, এ বছর খরা ও বন্যা তেমন ছিল না। যে কারণে গত বছরের চেয়ে এবার ফলন আরো ভাল হয়েছে। ক্ষেতের পরিচর্যা শেষে পরিমানমতো সার ও কীটনাশক দেওয়া হয়েছে। আমাদের এলাকার প্রতিটি ইরি, বোরো ক্ষেত এখন ধানের কচি শীষে পরিপূর্ণতা রূপ নিয়েছে। মাঠের দিকে চোখ পড়লেই মনটা ভরে যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, দেখতে দেখতে চৈত্র চলে যাবে। বৈশাখের মাঝামাঝি ধান পুরাপুরি পেকে উঠবে। আবহাওয়া চরম বৈরী না হলে তখন ধান কাটতে শুরু করবো। এখন থেকেই আমাদের পুরাপুরি প্রস্তুতি চলছে। ধান কাটার কামলা এলাকায় মিলেনা, তাই আমরা আগাম উত্তরাঞ্চলের মাঠ কামলাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছি। তখন সব কাজ বাদ দিয়ে শুধু ধান কাটা, মাড়াই ও ঘরে তোলার জন্য প্রস্তুত আমরা।
উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, উপজেলায় হাইব্রিড,উফশীসহ স্থানীয় বিভিন্ন জাতের ধান রোপণ করা হয়েছে। বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৪ হাজার ২৮১ হেক্টর জমি। এর মধ্যে আবাদ হয়েছে ৪ হাজার ১৯২হেক্টর জমিতে। যা থেকে ১৮ হাজার ৬৯৮ মেট্রিক টন ধান পাওয়া যাবে বলে আশাবাদী স্থানীয় কৃষি অফিসের।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আয়শা আক্তার বলেন, আমরা এবার বোরো ধানের বাম্পার ফলনের আশা করছি। ঘাম ঝরানো স্বপ্নের ফসল কিছু দিনের মধ্যেই ঘরে তুলে আনতে কৃষকদের আগাম প্রস্তুতি চলছে। আমাদের কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ থেকে এবার কৃষকদের মাঝে পর্যাপ্ত কৃষি উপকরণ, সার ও কীটনাশক সরবারহ করেছি। নিবিড় পরিচর্যার বিনিময়ে এবার বোরো ধানের ফলন অন্যান্য বছরের তুলনায় অনেক ভালো হয়েছে।

উপরে