ঢাকা, শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ২৭ মে, ২০২৩ ১৭:৩৭

আসন্ন বাজেটে বরাদ্দ বাড়ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে

নিজস্ব প্রতিবেদক
আসন্ন বাজেটে বরাদ্দ বাড়ছে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে

 

এ বছর বাজেটে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে বড় অঙ্কের ভর্তুকি থাকছে, আর সেই সঙ্গে বাড়ছে বরাদ্দও। নীতিনির্ধারকরা বলছেন, এবার বিদ্যুৎখাতে সঞ্চালন ও বিতরণব্যবস্থার আধুনিকায়ন গুরুত্ব পাচ্ছে। এদিকে জ্বালানিখাতে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে গ্যাস উত্তোলন, সঞ্চালন পাইপলাইন বৃদ্ধি অগ্রাধিকার পাবে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগ আসন্ন বাজেটে ৪১ হাজার ৩৭০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছে। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা বেশি। এর মধ্যে বিদ্যুৎ খাতের জন্য ৩৮ হাজার ২০ কোটি টাকা এবং জ্বালানি বিভাগের জন্য ৩ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা চাওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ পরিস্থিতি উন্নয়নে বরাদ্দ বাড়ানোর পরামর্শ বিশেষজ্ঞদেরও।

তথ্যমতে, প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎ উৎপাদনে খরচ হয় ১১ টাকা ৬৪ পয়সা। এর মধ্যে পিডিবি দেয় ৬ টাকা ৭০ পয়সা এবং সরকারকে ভর্তুকি দিতে হয় ৪ টাকা ৯৪ পয়সা। এ হিসেব চলতি অর্থ বছরে পিডিবির লোকসান হতে পারে ৪৬ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা, যার পুরোটাই ভর্তুকি দিতে হবে সরকারকে। ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের এই লোকসান ৩৮ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকায় নামিয়ে আনতে চায় সরকার।

তবে, ভর্তুকি কমাতে গত বছর জ্বালানির দাম কয়েক দফা বাড়ানো হয়। তিন দফায় বিদ্যুতের দাম বাড়ে ১৫ শতাংশ। গ্যাসের দামও বাড়ানো হয় দুই দফা। আর জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয় ৪২ থেকে ৫২ শতাংশ পর্যন্ত। এতকিছুর পরও ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। ফলে আরেক দফা বাড়তে পারে দাম। এ অবস্থায় আগামী অর্থবছরের জন্য অতিরিক্ত ৯ হাজার ৩৭১ কোটি টাকা বেশি বরাদ্দ চায় এই দুই বিভাগ। বরাদ্দের পাশাপাশি নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর আহ্বান জানানো হয়।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এজাজ আহমেদ বলেন, আমাদের নিজস্ব জ্বালানির দিকে নজর দিতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের নিজস্ব গ্যাস আহরণের বিষয়ে আরও বেশি ভূমিকা রাখতে হবে। কয়লা আহরণের বিষয়েও চিন্তা করা উচিত। প্রয়োজন হলে বিদেশে কয়লা খনি কিনা যেতে পারে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে ভর্তুকি কমাতে গেলে জ্বালানির দাম আরও বাড়বে, যা জীবনযাত্রার ব্যয় আরেক দফা বাড়াতে পারে বলে জানান বিশেষজ্ঞরা।

নসরুল হামিদ বলেন, প্রায় ৫৬ শতাংশ বাজেট বিদ্যুতের সঞ্চালন ও বিতরণের ক্ষেত্রে রাখা হয়েছে। এছাড়া গ্যাসফিল্ডে প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি ড্রিলিং হবে। সেই সঙ্গে পুরো গ্যাস স্ট্রিম, আপস্ট্রিম থেকে ডাউনস্ট্রিম পর্যন্ত অটোমেশনে পরিণত করা হবে।

তবে শুধু বরাদ্দ বাড়ানো কিংবা ভর্তুকি নয়, বিদ্যুৎ ও জ্বালানিখাতকে গ্রাহকবান্ধব করে সামগ্রিকভাবে সংস্কারের তাগিদ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. এম শামসুল আলম বলেন, ‘সরকারকে এ খাত থেকে মুনাফা করার নীতি থেকে সরে আসতে হবে। সেই সঙ্গে ভর্তুকি থাকা না-থাকার বিষয়টি অর্থবহ হবে না, যদি এ খাতের যত রকমের অন্যায়, অযৌক্তিক ও লুন্ঠনমূলক ব্যয় মুনাফা সম্পৃক্ত হয়েছে সেগুলো চিহ্নিত করা না হয়।’

এদিকে সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম তামিম বলেন, প্রকল্পগুলোতে যতটা সম্ভব কম ডলার ব্যয় করতে হবে। একই সঙ্গে যেসব নতুন প্রকল্পে অনেক ডলার ব্যয় হবে, সেগুলো নিরুৎসাহিত করতে হবে। অর্থাৎ, সরকারকে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অর্থায়ন করতে হবে।

উপরে