ঢাকা, বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪
আপডেট : ১৭ জুন, ২০২১ ১৭:৫১

আ.লীগ গণতন্ত্রের মতো পরিবেশও ধ্বংস করছে : ফখরুল

প্রতিদিন ডেস্ক
আ.লীগ গণতন্ত্রের মতো পরিবেশও ধ্বংস করছে : ফখরুল

ক্ষমতাসীন হয়ে আওয়ামী লীগ যেভাবে গণতন্ত্র ধ্বংস করেছে, সেভাবে পরিবেশও ধ্বংস করছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) দুপুরে রাজধানীর বেরাইদে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আয়োজনে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।

ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর রাস্তার পাশে যে বড় বড় গাছ ছিল সেগুলো ধ্বংস করেছে। জেলা পরিষদের যত গাছ ছিল সব নিজেরা ভাগাভাগি করে নিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ প্রকৃতি ধ্বংস করেছে, পরিবেশ ধ্বংস করেছে, সেই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিবেশও ধ্বংস করেছে। সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের মানুষকে তারা চরম বিপদের মধ্যে ঠেলে দিয়েছে। এই যে তুরাগ নদী, সব দখল হয়ে যাচ্ছে। কারা দখল করছে, খোঁজ নিয়ে দেখেন সব আওয়ামী লীগের নেতারা দখল করছে। কারা সেখানে বিভিন্ন স্থাপনা তৈরি করছে? পাওয়ার প্লান্ট তৈরি হচ্ছে কারা? আওয়ামী লীগের এমপি। এরপর ক্লাব তৈরি হচ্ছে, আওয়ামী লীগের নেতাদের আশ্রয়ে। রূপগঞ্জের দিকে যদি যান, দেখবেন আওয়ামী লীগের নেতা, এমপি-মন্ত্রীরা সব দখল করে ফেলেছে। এসব দখল করে একটা বিরূপ প্রকৃতি তৈরি করছে।

আওয়ামী লীগ দুর্নীতির মহোৎসব শুরু করেছে অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, করোনার নিয়েও তারা ব্যবসা করছে। মানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকার ধ্বংস করে দিয়েছে। পরিবেশ উন্নয়নের জন্য এই সরকার কত ভাগ বরাদ্দ দিয়েছে আপনারা কি বলতে পারবেন? খুব সামান্য। অথচ এই পরিবেশের জন্য আমাদের দেশনেত্রী খালেদা জিয়া অনেক বেশি বরাদ্দ দিয়েছিলেন। সমস্ত উপকূলবর্তী এলাকায় গাছ লাগানোর জন্য লাখ লাখ টাকা বরাদ্দ করেছিলেন। আমরা নতুন করে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে সারাদেশে বৃক্ষায়ন কর্মসূচি শুরু করেছি। এটাকে আমরা একটা সামাজিক আন্দোলনে পরিণত করতে চাই।

খালেদা জিয়া খুবই অসুস্থ জানিয়ে তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে তিনি (খালেদা জিয়া) খুব প্রিয় মানুষ। কারণ তিনি একজন গৃহবধু ছিলেন। যখন এই দেশের মানুষের প্রয়োজন ছিল তখন তিনি রাস্তায় বেরিয়ে এসেছেন। দীর্ঘ নয় বছর সংগ্রাম করেছেন, কারাগারে গেছেন। যুদ্ধ করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছেন। আওয়ামী লীগের সরকার কতটা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার দল, যে মামলায় খালেদা জিয়াকে সাজা দেয়া হয়েছে সেখানে তার কোনো রকম সংশ্লিষ্টতা নেই। তারা বলছে, দুই কোটি টাকা তছরুপ হয়েছে। মূলত একটা পয়সাও তছরুপ হয়নি। দুই কোটি ৩৪ লাখ টাকা এখন আট কোটির ওপরে ব্যাংকে জমা হয়ে আছে। মিথ্যা একটা মামলা দিয়ে তাকে কারাগারে আটক করে রাখা হয়েছে। আর এখন আওয়ামী লীগের নেতা-মন্ত্রীরা হাজার কোটি টাকা পাচার করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে। গত ৫-৬ বছরের মধ্যে ছয় লাখ কোটি টাকা পাচার হয়ে গেছে।

মির্জা ফখরুল বলেন, খালেদা জিয়াকে দীর্ঘ চার বছর কারাগারে আটক রাখার কারণে করোনা থেকে মুক্ত হলেও অনেকগুলো রোগে আক্রান্ত হয়েছেন। তার হার্ট, কিডনি, লিভারে সমস্যা তৈরি হয়েছে। ডায়াবেটিস আছে। সবগুলো মিলিয়ে তিনি অনেক অসুস্থ। তার পরিবার সরকারের কাছে আবেদন করেছিল যে, তাকে বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হোক। এই সরকার রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে তাকে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করেছে। সরকারকে আহ্বান জানাবো, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বাদ দিয়ে এই নেত্রীকে, যিনি গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করেছেন, তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, সেই নেত্রীকে চিকিৎসার সুযোগ দেয়া হোক। তাকে মুক্তি দেয়া হোক।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মুনসী বজলুল বাসিত আনজুর সভাপতিত্বে ও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আব্দুল আলীম নকীর পরিচালনায় অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল, সহ-পরিবেশ ও বন সম্পাদক কাজী রওনকুল ইসলাম টিপু, যুবদল ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সহ-সাধারণ সম্পাদক জি এম শামসুল হক, তুহিরুল ইসলাম তুহিন, দফতর সম্পাদক এবিএমএ রাজ্জাক প্রমুখ।

উপরে